প্রকাশিত: ২০১৬-০৮-১১ ০১:৫৬:৪৬
সাহিত্য ডেস্ক:
বহুমাত্রিক জ্যোতির্ময় ও বাংলা সাহিত্যের প্রথা বিরোধী লেখক হুমায়ুন আজাদের দ্বাদশ মৃত্যুবার্ষিকী আজ।
২০০৪ সালের ১২ আগস্ট জার্মানির মিউনিখ শহরে রহস্যজনকভাবে তিনি মৃত্যু বরণ করেন। মৃত্যুর আগে ঐ বছর ২৭ ফেব্রুয়ারি হুমায়ুন আজাদ একুশে বই মেলায় উগ্র মৌলবাদীদের সন্ত্রাসী হামলার শিকার হন। সে সময় এই হামলাকে কেন্দ্র করে পুরো দেশের প্রগতিশীল সমাজ বিক্ষোভে ফেটে পড়ে।
হুমায়ুন আজাদ ১৯৪৭ সালের ২৮ এপ্রিল মুন্সিগঞ্জের রাড়িখাল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। প্রথাবিরোধী এই লেখক ছিলেন একই সাথে কবি, উপন্যাসিক, প্রাবন্ধিক, ভাষা বিজ্ঞানী ও সাহিত্য সমালোচক।
তিনি ছিলেন মার্ক্সিয় দর্শনের অনুসারি এবং একজন মুক্তচিন্তার ধারক-বাহক ও পথ প্রদর্শক। সমাজের প্রতিটি রন্ধ্রে বিরাজমান সব প্রথাকে তিনি আস্তাকুঁড়ে ফেলে হয়ে উঠেছিলেন প্রথাবিরোধী এক মানুষ। তাই হুমায়ুন আজাদের লিখনির মাঝেই প্রকাশ পায় তাঁর প্রথা বিরোধিতা।
সমসাময়িক লেখক সাহিত্যিকদের সাহিত্য নিয়ে তিনি সমালোচনা করেছেন নির্দ্বিধায়। লেখকের এই প্রথা বিরোধিতার ফলে তিনি নানান সময়ে আলোচিত-সমালোচিত হলেও বিজ্ঞানমনষ্ক ও যুক্তিবাদী চিন্তা চেতনার কারণে বাংলা সাহিত্যে তাঁর গ্রহণযোগ্যতা বিন্দুমাত্র কমেনি, বরং বেড়েছে বহুগুণ। তাই তাঁর মৃত্যুর এক যুগ অতিবাহিত হলেও এখনও তিনি এবং তাঁর লেখনি অপরিমেয় চিন্তার খোরাক যোগায়।
ধর্মীয় মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার ঘোর বিরোধী এই লেখকের উল্লেখযোগ্য উপন্যাসগুলোর মধ্যে রয়েছে পাক সার জমিন সাদ বাদ, ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইল, যাদুকরের মৃত্যু, শ্রাবণের বৃষ্টিতে রক্তজবা।
কাব্য গ্রন্থের মধ্যে আছে সব কিছু নষ্টদের দখলে যাবে, আমি বেঁচে ছিলাম অন্যদের সময়, অলৌকিক ইস্টিমার। এছাড়া ভাষা বিজ্ঞানের বইয়ের মধ্যে বাংলা ভাষার শত্রুমিত্র, বাঙলা ভাষা (প্রথম ও দ্বিতীয় খণ্ড), তুলনামূলক ও ঐতিহাসিক ভাষা বিজ্ঞান। তাঁর লেখা প্রবচন গুচ্ছ পাঠকদের বিশেষ নজর কাড়ে। এছাড়া তিনি লিখেছেন কিশোরসাহিত্য ও সমালোচনামূলক বহু গ্রন্থ।
২০১২ সালে সাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য তিনি মরণোত্তর একুশে পদক লাভ করেন।
ধর্মীয় মৌলবাদের প্রবল আক্রোশ ও আক্রমণে তাঁর রক্ত ঝরলেও এখনও সে হত্যাচেষ্টা মামলার নিষ্পত্তি হয় নি।
আপনার মন্তব্য