প্রতিটি কবিতাই অনেকটা ওহী আকারে আসতে থাকে- হাসান মসফিক

একুশে গ্রন্থমেলার লেখক-পাঠকের অপূর্ব মিলনমেলা। আমরা সিলেটটুডে২৪.কমের পক্ষ থেকে মুখোমুখি হয়েছি লেখক-প্রকাশকদের সাথে। এবারের পর্বে কথা বলছেন কবি, সম্পাদক হাসান মসফিক

 প্রকাশিত: ২০১৫-০১-১৪ ২১:১১:৫৭

 আপডেট: ২০১৫-০১-৩০ ১৯:২৫:১৮

ছবি: জাকির হোসেন

নিউজ ডেস্ক:

হাসান মসফিক। পুরো নাম সৈয়দ মাহবুব মসফিকুল হাসান। মূলত কবি। জন্মস্থান লোহাগাড়া, চট্টগ্রাম। শিক্ষাজীবনে চট্টগ্রাম কলেজ থেকে সন্মানসহ স্নাতকোত্তর, পরে বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দূর-শিক্ষণে ব্যবস্থাপনায় দীর্ঘমেয়াদী পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ডিপ্লোমা এবং সদ্য সম্পন্ন হলো ব্যবসা প্রশাসনে স্নাতকোত্তর। একটি দেশীয় ঔষধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানে বাণিজ্যিক বিভাগে কর্মরত। ২০১১ খ্রিস্টাব্দের শেষদিক থেকে লেখালেখি শুরু। ছোট কাগজ, সংকলন, অনলাইনের সাহিত্যে পাতায় লেখালেখিতে সরব। কবিতাকে তিনি ওহী নাজিলের মতো ভাবেন তাই সময়মত লিখতে না পারলে অনেক লেখাই হারিয়ে যায় বলে তাঁর অভিমত। একুশে গ্রন্থমেলা-২০১৫তে তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ বের হলেও বিভিন্ন মাধ্যমে লেখালেখির সুবাদে পাঠকমহলে ইতোমধ্যেই পরিচিতি লাভ করেছেন। 

বর্তমানে ওয়েবজিন বিভুঁই’র সম্পাদনা পর্ষদের সাথে জড়িত।

সিলেটটুডে২৪ পাঠকদের উদ্দেশে তাঁর নিজের লেখালেখি, বাংলা সাহিত্যের বিভিন্ন বিষয় এবং বইমেলা নিয়ে কথা বলেছেন খোলাখুলিভাবে। বিস্তারিত পাঠকদের উদ্দেশে:
                                                                         
সিলেটটুডে২৪: অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৫-তে আপনার কী বই আসছে? 
হাসান মসফিক: একটি কবিতাগ্রন্থ আসছে; নাম “মায়া ফড়িঙ”।  

সিলেটটুডে২৪: আপনার প্রকাশিত বই সংখ্যা কত?
হাসান মসফিক: এটিই মূলত আমার প্রকাশিত/প্রকাশিতব্য প্রথম বই।  

সিলেটটুডে২৪: অমর একুশে গ্রন্থমেলায় আপনার প্রত্যাশা কী? 
হাসান মসফিক: বইমেলাকে কেবল বই প্রকাশ, বিক্রি, লেখক-পাঠক সম্মিলন’র মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে বরং ভাষাকে  কীভাবে আরও সমৃদ্ধ ও ছড়িয়ে দেওয়া যায় সেসব বিষয়ে ভাবনা চিন্তা এবং কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।  

সিলেটটুডে২৪: অমর একুশে গ্রন্থমেলা কিভাবে আরো আকর্ষণীয় করা যায়? 
হাসান মসফিক: শুধু ঢাকা বইমেলা-কে আরো আকর্ষণীয় বা জৌলুস পূর্ণ করার পক্ষপাতি আমি নই! বরং এ মেলাকে ছড়িয়ে দেওয়ার পক্ষে। অন্তত বিভাগীয় পর্যায়ে এমন মেলা আয়োজনের আশা বা প্রস্তাব আমি ব্যক্ত করছি। এক্ষেত্রে বিদ্যমান সমস্যা নিরসন করে খুব দ্রুতই কার্যকরী ভূমিকা দেখতে চাই।  

সিলেটটুডে২৪: একুশে গ্রন্থমেলায় নিয়মিত যান? কী কারণে? 
হাসান মসফিক: আমি যেহেতু ঢাকার বাইরে থাকি এবং বেশ ব্যস্তই থাকি। তবু, মেলা চলাকালীন সময়ে প্রাণ যেন বইমেলাতেই পড়ে থাকে! বিভিন্ন মাধ্যমে যদিও প্রতিদিনের আপডেট পেয়ে থাকি এবং নজর রাখা হয় নানা বিষয়ের দিকে। পুরো মেলার এক বা দুইদিন থাকা হয় মেলাতে। উদ্দেশ্য মূলত নতুন প্রকাশিত বইপত্র সংগ্রহ করা; এর বাইরে সারা দেশ বা বিদেশ থেকে পরিচিতজন বা বন্ধুরা আসেন, দেখা-সাক্ষাৎ আড্ডা হয়। সারাবছরে এই মেলা ছাড়া সাহিত্যমনা এত বন্ধুর সমাবেশ তো আর কোথাও ঘটেনা!   

সিলেটটুডে২৪: লেখালেখিতে কোন বিষয়টিকে আপনি গুরুত্ব দিয়ে থাকেন? কী যুক্তি এর পেছনে?  
হাসান মসফিক: এখন অব্দি লেখালেখি বলতে বেশ কিছু কবিতা, কয়টা গদ্য, ফিচার লেখা হয়েছে। এর বাইরে লেখা বলতে সামান্যই। ব্যক্তিগত ব্যস্ততার বাইরে বড় একটা অংশই জুড়ে থাকে “বিভুঁই” নিয়ে চিন্তাভাবনায়। কবিতার বাইরে বাকি লেখাগুলো হয়ত থিমেটিক লিখি। কিন্তু, কবিতায় আরোপিত কিছু করা, মানে লেখা প্রায়শ সম্ভব হয়ে ওঠেনা। কেননা, প্রতিটি কবিতাই অনেকটা ওহী আকারে আসতে থাকে! যেজন্য সময়মত তাকে লিখতে না পারার কারণে বেশ কিছু লেখা হারিয়েও যায়। পরে আর মনে আসেনা। সেভাবে একটি লেখা লেখার পর পরবর্তী লেখার সময় আমার প্রায় অজানা। এমনও হতে পারে- আর কোন কবিতাই লেখা হবেনা! মূলত এই কবিতা লেখালেখি একটা অনন্য অভিজ্ঞতাও বটে! আর,  বিষয় হিসবে লেখায় মূলত সমকালীন প্রায় সব বিষয়ই কোন না কোন ভাবে উপস্থিত থাকে। আবার, এমনও বলা যায় না যে- সমকালীন সব বিষয়ই উপস্থিত! তবে, কবিও অন্য আর দশজনের মতো সমকালকে উপেক্ষা করে চলতে পারেন না।   
 
সিলেটটুডে২৪: আপনার বই আর পাঠক এবং আপনি আর অন্যান্য বই এ সম্পর্কে আপনার কী মূল্যায়ন? 
হাসান মসফিক: বই মাত্রই মেলায় যাচ্ছে। যেহেতু এটিই আমার প্রথম বই; সেহেতু বই প্রকাশের পূর্ণ একটা অভিজ্ঞতা লাভের অপেক্ষায় আছি। লেখালেখি এবং বিভিন্ন মাধ্যমে প্রকাশ প্রায় সারা বছর জুড়েই থাকে। বইয়ে প্রকাশিতব্য বেশীরভাগ লেখাই বিভিন্ন ম্যাগ বা অনলাইনে প্রকাশিত হয়ে থাকে; সেহেতু পাঠক লেখা আগেভাগেই পড়ার সৌভাগ্য লাভ করে থাকে। সেদিক দিয়ে লেখকের নির্দিষ্ট কিছু পাঠক আগেই তৈরি হয়ে থাকে! সেদিক দিয়ে বেশ কিছু লেখার প্রতিক্রিয়া আগেভাগেই পাওয়া হয়েছে। তা লেখায় বা লিখে যাওয়ার অনুপ্রেরণা হিসেবেও কাজ করেছে। 

এবারে বেশ কিছু তরুণের বই বেরুচ্ছে। যারা স্বীয় লেখালেখির মাধ্যমে ইতোমধ্যেই একটা পরিচিতি এবং নির্দিষ্ট  পাঠক তৈরি করে নিয়েছেন। সেদিক দিয়ে এই মেলা বেশ গুরুত্বপূর্ণই বলা যায়। তবে, আমি চাই যে কোনভাবে ছাপা বইয়ের পাঠক বাড়ুক।       

সিলেটটুডে২৪: বই প্রকাশে আপনি কী ধরণের প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হয়েছিলেন? কিভাবে উত্তরণ ঘটল?
হাসান মসফিক: খুব বেশি প্রতিবন্ধকতা এসেছে বলে আমার মনে হয়না! যা এসেছে, বলা যায়- সামান্যই! 

সিলেটটুডে২৪: প্রকাশিত, প্রকাশিতব্য বই আর প্রকাশক(দের) সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন 
হাসান মসফিক: বই মাত্রই প্রকাশ হচ্ছে। অভিজ্ঞতা তাই সমৃদ্ধ নয়। তবে, বই প্রকাশ হওয়ার আগে থেকেই যা আশা করতাম তা এখনও অক্ষুণ্ণ রয়েছে। প্রকাশকরা তরুণ, মেধাবীদের বই প্রকাশে এগিয়ে আসবেন। লেখক-প্রকাশক মাধ্যমে যেসব জটিলতা যুগ যুগ ধরে চলে আসছে, তা নিরসনের চেষ্টা করবেন। 

সিলেটটুডে২৪: সিলেটটুডে২৪.কম’র পক্ষ থেকে আপনাকে ধন্যবাদ। 
হাসান মসফিক: সবার মঙ্গল হোক। 


গ্রন্থনা: ক.য়া/জানুয়ারি ১৪, ২০১৫

আপনার মন্তব্য