হুমায়ুননামা এবং একজন হেরেমবাসিনীর গল্প-২

গুলবদন ছিলেন বাদশাহ হুমায়ুনের বোন, আকবরের ফুফু। আকবর তাঁকে দায়িত্ব দেন হুমায়ুনের জীবনবৃত্তান্ত লেখার। তিনিও লিখেন তাঁর নিজের মত করে। হুমায়ুনকে নিয়ে তাঁর এ বর্ণনাই হুমায়ুননামা।

 প্রকাশিত: ২০১৫-০৮-২৫ ০৩:৩৭:৩১

 আপডেট: ২০১৫-০৮-২৫ ০৪:০১:৪১

ফরিদ আহমেদ:

পূর্ব প্রকাশিতের পর...

৩. গোলাপ রাজকুমারী
গুলবদনের জন্ম ১৫২৩ সালে কাবুলে। বাবরের দিল্লির সিংহাসন দখলের দু বছর আগে। কাবুল বিজয়  বাবরের জন্য সৌভাগ্য হিসাবে দেখা দিয়েছিল। এখানে থাকার সময়েই তাঁর আঠারো সন্তান জন্মেছিল চার স্ত্রীর গর্ভে। চতুর্থ স্ত্রী দিলদার বেগমের গর্ভে জন্মেছিলেন গুলবদন বেগম।  কিন্তু তাঁকে পালিত কন্যা হিসাবে নিয়ে নেন বাবরের জ্যেষ্ঠা বেগম মহম বেগম। শুধু গুলবদনই নন, তাঁর আরেক ভাই হিন্দালকেও দত্তক নেন তিনি। নিজের সন্তানের মতই প্রতিপালন করেন তিনি তাঁদের। মহম বেগম ছিলেন হুমায়ুনের মাতা। হুমায়ুনের পর তাঁর আরো চারটি সন্তান জন্মেছিল। তিন কন্যা এবং এক পুত্র। এরা সকলেই শৈশবে মারা গিয়েছেল। হয়তো সে কারণেই এই দত্তক গ্রহণ। তবে, এই দত্তক গ্রহণের কারণেই গুলবদন বেগমের সাথে বৈমাত্রেয় ভ্রাতা হুমায়ুনের যথেষ্ট নৈকট্য গড়ে উঠে। হয়তো এজন্যই গুলবদন বেগম আজীবন বিশ্বস্ত থেকেছেন হুমায়ুনের প্রতি, দেখিয়েছেন নিঃস্বার্থ ভগ্নিপ্রেম ভ্রাতার প্রতি।

শিক্ষিত, ধার্মিক, রুচিশীল এবং মার্জিত রমণী ছিলেন তিনি। রাজপরিবারের একজন সদস্য হবার জন্য যে ধরণের গুণাবলী থাকা দরকার, তার সবই ছিল তাঁর মধ্যে। পড়াশোনার প্রতি প্রবল আগ্রহ ছিল তাঁর। তুর্কি এবং ফারসিতে ছিল অসামান্য দক্ষতা। ছিলেন তাঁর সময়ের একজন নামকরা কবি। কিন্তু দুর্ভাগ্য যে তাঁর কবিতার প্রায় পুরোটাই হারিয়ে গিয়েছে। ছিটেফোঁটা দুই এক লাইন ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এখানে সেখানে। তীক্ষ্ণ পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা ছিল তাঁর। রাজনীতির হালচাল এবং যুদ্ধের ময়দানের জটিলতা এবং কৌশল সম্পর্কে  সম্যক ধারণা ছিল। বাবা বাবর এবং ভাই হুমায়ুনের নানাবিধ যুদ্ধের কারণে ভারতের বিভিন্ন শহরে ভ্রমণ করতে হয়েছে, যেতে হয়েছে জীবনের নানাবিধ জটিল অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে। এগুলোই তাঁকে ঋদ্ধ করেছে রাজনীতি, সমাজনীতি এবং সমরনীতি বিষয়ে।

সতের বছর বয়েসে তাঁর বিয়ে হয়েছিল চাচাতো ভাই খিজির খাজা খানের সাথে। একটা ছেলেও জন্মেছিল তাঁদের (একাধিকও হতে পারে, সঠিক তথ্য নেই এই বিষয়ে)। খিজির খাঁ একবার হুমায়ুনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহকারীদের সঙ্গে যুক্ত হতে চেয়েছিলেন, কিন্তু সেই কাজ করা থেকে বিরত রাখতে সক্ষম হয়েছিলেন গুলবদন বেগম।

খানুয়ার যুদ্ধের পরেই বাবর বুঝে যান যে, মধ্যে এশিয়ায় ফেরার স্বপ্ন আর তাঁর পূরণ হবে না। এই যুদ্ধের এক বছর পর ১৫২৮ সালে কাবুলে অবস্থিত তাঁর হেরেমের লোকজনদের হিন্দুস্থানে আসার নির্দেশ পাঠান।  এই নির্দেশ মোতাবেক মহম বেগমের সাথে গুলবদন দীর্ঘ যাত্রা শেষে হিন্দুস্থানে এসে পৌঁছেন।

১৫৪০ সাল পর্যন্ত আগ্রাতেই ছিলেন গুলবদন বেগম। চুসা এবং কনৌজের যুদ্ধে শেরশাহ সুরির কাছে পরাজিত হয়ে হুমায়ুনের চরম ভাগ্য বিপর্যয় ঘটে। দিল্লির সিংহাসন চ্যুত হন তিনি। আশ্রয়ের সন্ধানে এদিক সেদিক ঘুরতে থাকেন তিনি। আফগান অঞ্চল তখন হুমায়ুনের ভাই কামরান মির্জার দখলে। তবে, হুমায়ুনের সাথে তাঁর সম্পর্ক সাপে নেউলের মত। হুমায়ুনের অনুগত গুলবদন তখন ফিরে যান কাবুলে। আশ্রয় নেন কামরান মির্জার কাছে। এ থেকে ধারণা করা যায় যে, কামরান মির্জাও তাঁর এই ভগিনীটিকে স্নেহ করতেন। তিনি হুমায়ুনের অনুগত অন্য সব মহিলাদের ধনরত্ন কেড়ে আত্মসাৎ করলেও গুলবদনের সাথে সেরকম কোনো অনুচিত কাজ করেন নি। হতে পারে তিনি হয়তো গুলবদনের স্বামী খিজির খাঁকে শত্রু করে তুলতে চান নি।

১৫৫৫ সালে হুমায়ুন পূণরায় দিল্লির মসনদ অধিকার করেন। কিন্তু, পরের বছরই সিঁড়ি থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু ঘটে। হুমায়ুনের মৃত্যুতে আকবর সিংহাসনে বসেন। দুই বছর পরে তিনি কাবুলে অবস্থানকারী হুমায়ুনের অনুগত হেরেমবাসিনীদের হিন্দুস্থানে ফিরে আসতে বলেন। তাঁরা সানন্দে সেই আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে আবারও চলে আসেন ভারতে। আকবরের মাতা হামিদা বানুর সাথে গুলবদনের আমৃত্যু সখ্যতা ছিল।

এর পরে ১৫৭৫ সাল পর্যন্ত গুলবদনের বিষয়ে তেমন কিছু জানা যায়। এই বছর রাজপরিবারে আরো কিছু মহিলাকে সাথে নিয়ে হজ্জে যান তিনি। সম্রাট আকবর এই হজ্জযাত্রা নির্বিঘ্ন করার যাবতীয় ব্যবস্থা নেন। মক্কায় তাঁর আগমণ বিরাট আলোড়ন তুলেছিল। সেখানে তিনি চার বছর অবস্থান করেন। সিরিয়া, এশিয়া মাইনরশ দূরদূরান্তের লোকজন রাজকীয় রমণীদের দেখার জন্য এবং কৃপা ভিক্ষা করার জন্য ভিড় জমাতো তাঁদের কাফেলার সামনে।

ফেরাটা অবশ্য খুব একটা সুখকর হয় নি। এডেনে জাহাজডুবির কারণে সেখানে সাত মাস অবস্থান করতে হয় তাঁদের। সাত বছর পর ১৫৮২ সালে হজ্জযাত্রীদের সাথে আগ্রায় ফিরে আসেন গুলবদন বেগম।

১৬০৩ সালে আশি বছর বয়সে মারা যান গুলবদন বেগম। সামান্য কয়েকদিনের জ্বরই তাঁর মৃত্যুকে ডেকে নিয়ে এসেছিল। মৃত্যু শয্যায় হামিদা বানু এবং হিন্দালের মেয়ে রুকাইয়া উপস্থিত ছিল। গুলবদনকে চোখ মুদতে দেখে ব্যাকুল হয়ে তাঁকে ডাকতে থাকেন হামিদা বানু। চোখ না খুলেই অস্ফুট স্বরে শেষ কথা বলে যানগুলবদন, “আমি যাচ্ছি, কিন্তু তোমরা বেঁচে থাকো।“

৪. ইতিহাসের সরল পাঠ
মোগল শাসকেরা শুধু রাজ্য শাসন করেই তৃপ্ত ছিলেন না, নিজেদের শৌর্য্যবীর্যগাথা নিয়ে প্রশংসাসূচক বাক্য শোনারও মনোবাঞ্ছা ছিল। বাসনা ছিল ইতিহাসের পাতায় অমর হবার। সে কারণেই তাঁরা বিখ্যাত সব ঐতিহাসিকদের ভাড়া খাটিয়েছেন তাঁদের মনোপুত ইতিহাস লেখার জন্য। বাবরের ক্ষেত্রে এটা লাগে নি। কারণ তিনি নিজেই নিজের জার্নাল লিখে রেখে গেছেন। তাঁর ঝঞ্ঝাবহুল জীবনের অকপট বর্ণনা লিখে রেখেছেন তিনি তাঁর বাবরনামায়। কিন্তু তাঁর উত্তরসূরী আকবরের আকাঙ্ক্ষা ছিল আরো বেশি। আরো বেশি প্রশংসাসূচক, আরো বেশি ভালো ভালো কথা, আরো বেশি বীরত্বব্যাঞ্জক ইতিহাসের প্রতি লোভ ছিল তাঁর।

গুলবদনের গল্প বলার দারুণ সুনাম ছিল। এই সুনামের কারণেই বাদশা আকবর তাঁকে হুমায়ুনের জীবনবৃত্তান্ত লেখার জন্য দায়িত্ব দেন। মোগলদের মোটামুটি এটা একটা রেওয়াজই ছিল বিভিন্ন নামী দামী পণ্ডিতদের দিয়ে নিজেদের সময়কালকে লিপিবদ্ধ করা। আকবরের নিজের জীবনী আকবরনামা লিখেছেন পারসি পণ্ডিত আবুল ফজল। আকবর তাঁর ফুফুকে হুমায়ুনের জীবনের বিজয়গাথার আনন্দ এবং পরাজয়ের বেদনাসমূহ লিখতে বলেন। গুলবদন আকবরের এই আহবানে সাড়া দেন এবং তার নিজের মত করে হুমায়ুনের জীবনের ঘটনাসমূহ বর্ণনা করেন। এই বর্ণনাই হুমায়ুননামা। মূল নামটা ছিল বিশাল। আহওয়াল হুমায়ুন পাদশাহ জামাহ কারডম গুলবদন বেগম বিন্তে বাবর পাদশা আম্মা আকবর পাদশাহ। এটা পরে হুমায়ুননামা হিসাবে বহুল পরিচিত হয়।

গুলবদন হুমায়ুননামা লিখেছিলেন সরল ফার্সিতে। ভাষার অলংকরণে তিনি যান নি, যেটা তাঁর সময়ের লেখকেরা করতেন। তাঁর বাবা বাবরও একই একই স্টাইলে বাবরনামা লিখেছিলেন। তাঁর সময়ের অন্য লেখকেরা যেখানে ঘটনা বর্ণনায় আলংকরিক ভাষার আশ্রয় নিয়েছেন, সেখানে গুলবদন যা ঘটেছে তার উপরেই নির্ভর করেছেন। যার কারণে উঁচুমানের লেখকদের তুলনায় তাঁর লেখা অনেক বেশি সতেজ এবং উঠে এসেছে হৃদয় থেকে। তাঁর লেখা থেকে শুধু হুমায়ুনের শাসনামলের বিভিন্ন দিকই উঠে আসে নি, বরং মোগল হেরেমের অন্তরালের জীবনযাপনও উঠে এসেছে। ষোড়শ শতকে লেখা মোগল কোনো নারীর লেখা।

এই স্মৃতিকথাটি হারিয়ে গিয়েছিল কয়েক শতাব্দী ধরে। পরে যখন পাওয়া গিয়েছে তখন এটির প্রায় জীর্ণ দশা। বাজেভাবে বাধাই করা। অনেকগুলো পৃষ্ঠাও খোয়া গিয়েছে। যা আর কোনো দিনই উদ্ধার করা যায় নি। অসম্পুর্ণ পাণ্ডুলিপি এটি। শেষ অধ্যায়ের অনেকখানি-ই নেই। তারপরেও যা আছে, সেটিই অবিশ্বাস্য। মোগল হেরেমে বসবাস করা উচ্চপর্যায়ের একজন নারীর চোখে আমরা সেই সময়কে দেখতে পাই। এই বইয়ের পাণ্ডুলিপি ছিল হাতে গোনা মাত্র কয়েকটা। সে কারণেই হয়তো এটি যে ধরণের গুরুত্ব পাওয়ার কথা ছিল তা পায় নি সেই সময়ে। মোগল ইতিহাসের এই দলিল লোক চক্ষুর অন্তরালে থেকে গিয়েছিল।

ছিন্নভিন্ন একটা কপি ছিল ব্রিটিশ মিউজিয়ামে। এ্যানেট এস বেভারিজ গুলবদনের এই ফার্সিতে লেখা বইটা ইংরেজিতে অনুবাদ করেন ১৯০২ সালে। ভারতে এর পেপারব্যাক সংস্করণ বের হয় ২০০১ সালে। এই পাণ্ডুলিপিটি উদ্ধার করেছিলেন কর্নেল জি ডাব্লিউ হ্যামিল্টন। তিনি শুধু এটি নয়, প্রায় হাজার খানেক পাণ্ডুলিপি সংগ্রহ করেছিলেন বিভিন্ন বিষয়ের উপর। তাঁর মৃত্যুর পরে তাঁর বিধবা স্ত্রী এটিকে ১৮৬৮ সালে বিক্রি করে দেন ব্রিটিশ মিউজিয়ামে। কিন্তু ১৯০১ সালের আগ পর্যন্ত এর অস্তিত্ব তেমন কেউ জানতো না। এ্যানেট এস বেভারিজ এটাকে অনুবাদ শুরু করার পরেই এর দিকে মানুষের নজর পড়ে।

আকবর তাঁর ফুফুকে খুব ভালো বাসতেন। গুলবদনের যখন ষাট বছর বয়েস, আকবর তাঁর গল্প বলার অতুলনীয় ক্ষমতার কারণে তাঁর এবং অন্যদের স্মৃতির উপর নির্ভর করে হুমায়ুন এবং বাবরের ইতিহাস রচনা করার জন্য বলেন। গুলবদন আকবরের এই অনুরোধে সাড়া দিয়েছিলেন। আর ফলাফল হয়েছিল বিস্ময়কর।

সেই সময়ে বা পরবর্তী সময়েও ইতিহাস লিখতো বাদশাহদের ভাড়া করা লোকেরা। এই সব ভাড়াটে লোকদের ইতিহাস হতো বাহুল্যময় এবং বিরক্তিকর। যার ইতিহাস লেখা হতো তাকে বিশাল পুজোনীয় কেউ বানিয়ে দেওয়া হতো কাল্পনিক সব গুণাগুণ আরোপ করে। আসলে কী ঘটেছিল সেগুলো প্রায়শই চেপে যেতো তাঁরা। গুলবদনের বই এই সব বৈশিষ্ট্য বর্জিত ছিল। তাঁর বর্ণনা ছিল অলংকারবর্জিত সাদামাঠা, একেবারে সত্যিটাকে তিনি তুলে এনেছিলেন অনাড়ম্বরভাবে। অনাড়ম্বর কিন্তু আন্তরিকতার কোনো খাদ ছিল না সেখানে।

তাঁর পাণ্ডুলিপি লেখা হয়েছিল অনেকটা ডায়েরির মত করে। তিনি যাঁদের নিয়ে লিখেছেন তাঁদের অনুভূতিকে গুরুত্ব দিয়েছেন। এমনকি এক্ষেত্রে নিজেকেও বাদ দেন নি। আর এ কারণেই পাঠকের কাছে এটি হয়ে উঠেছে আকর্ষণীয়। হুমায়ুননামা পড়লে কে গুলবদনের প্রিয় ছিল আর কে অপ্রিয় ছিল, এটা বুঝতে বিন্দুমাত্র বেগ পেতে হয় না। এমনই অকপট সারল্য ছিল তাঁর বর্ণনায়। হেরেমবাসিনী হবার ফলে অসাধারণ এক সম্পদের অধিকারী ছিলেন তিনি। এই সম্পদের কোনো নাগাল পুরুষ ঐতিহাসিকেরা কখনোই পান নি। হেরেমের অভ্যন্তরের মহিলাদের অভিমত, চিন্তাভাবনা এবং স্মৃতিকে যেভাবে তিনি কাজে লাগানোর সুযোগ পেয়েছেন, পুরুষ ইতিহাসবেত্তাদের পক্ষে তা সম্ভব ছিল না। বাবরের বিষয়ে তাঁর খুব একটা স্মৃতি ছিল না, যেহেতু তিনি তখন অনেক ছোট ছিলেন। কিন্তু হেরেমের অন্যান্য নারী, যাঁদের বাবরের সাথে স্মৃতি রয়েছে, তাঁদের কাছ থেকে তিনি সেগুলো সংগ্রহ করেছেন। গুলবদন সেই সময়কার সংস্কৃতি, প্রথা নিয়েও আলোচনা করেছেন। তিনি এগুলো নিয়ে আলাপ না করলে আমাদের হয়তো সেগুলো জানাই হতো না। হারিয়ে যেতো চিরদিনের জন্য।

হুমায়ুননামা অসম্পূর্ণ রচনা। হুমায়ুনকে নিয়ে লেখা কিন্তু হুমায়ুনের মৃত্যুর ঘটনা এতে নেই। হুমায়ুন মারা গেছেন ১৫৫৬ সালে। আর এই পাণ্ডুলিপি শেষ হয়েছে ১৫৫২ সালে। শেষটা হারিয়ে গেছে নাকি আদৌ লেখা হয় নি, তার কিছুই জানি না আমরা। তবে, যে অবস্থায় হঠাৎ করে অসম্পূর্ণ বাক্য দিয়ে এটি শেষ হয়েছে তাতে অনুমান করা যায় যে শেষ অংশটা হারিয়েই গেছে চিরতরে।

গুলবদন তাঁর পাণ্ডুলিপিতে প্রচুর তুর্কি শব্দ ব্যবহার করেছেন। কোনোটা এসেছে সাবলীলভাবে, কোনোটাকে বা জোর করে গুঁজে দেওয়া হয়েছে। গুলবদনের মাতৃভাষা ছিল তুর্কি। এমন কী তাঁর স্বামীর ভাষাও ছিল তুর্কি। ফার্সি তিনি শিখেছিলেন। ফলে, এই সন্দেহও জেগেছে যে, তিনি কি এটা ফার্সিতে রচনা করেছেন? নাকি, তুর্কিতে? তুর্কিতে যে তাঁর অসাধারণ দখল ছিল, এটা জানা যায় তাঁর বেড়ে উঠার পরিবেশ এবং বাবরের বইয়ের রেফারেন্স দেওয়া থেকে।

চলবে...
|| হুমায়ুননামা এবং একজন হেরেমবাসিনীর গল্প-১ এর URL:   http://www.sylhettoday24.com/news/details/Literature/8040

 

আপনার মন্তব্য