প্রাণের বর্ণমালা : আজকের বর্ণ ‘ট’

 প্রকাশিত: ২০১৬-০২-১৮ ১৫:০৮:৩৫

কালের লিখন:



টকটকে লাল সূর্য এখন, অস্ত যাচ্ছে বেলা-
টক্কর খাচ্ছে ভাবনার স্রোতে অলীক খেলা।
টনটন করে মনের ব্যথা, কষ্টের আস্ফালন,
টগবগানো রক্তের নামই- মূলত এই জীবন।

টনক নড়ে পথে নামলে, থমকে থামি আবার-
টপকানো পথ জানে ঠিক, কোনটা হারাবার।
টলটলে জল দেয় মনোবল, গ্লানি দেয় সময়-
টলোমলো মাতাল পা, ভুলে যায় অমূলক ভয়।

টপকে যাই সুদীর্ঘ পথ, আস্তে ধীরে গড়ায় ক্ষণ,
টপাটপ জল ঝরে অবিরল, জলে মগ্ন আয়তন।
টসটসে পেকে উঠে সময়ের আহ্লাদী বিষফোঁড়া-
টহলদারি চলছে কিন্তু শুরু থেকেই আগাগোড়া।

টপটপিয়ে বৃষ্টি ঝরে, বাড়ে সমানতালে রোদ-
টগরপ্রেমী মনের মধ্যে, আছে জীবনমূলক বোধ।


প্রাণের বর্ণমালা সম্পর্কে-
প্রাণের বর্ণমালা নিয়ে লেখা মূলত বাংলা বর্ণের খেলা। প্রতিটি বর্ণের প্রতি আলাদা মমত্ববোধ লালন করেই কালের লিখন কর্তৃক রচিত হয়েছে এ ধারাবাহিক লেখাগুলো।

মূল বর্ণকে উপজীব্য করে এক একটি কবিতার শরীর গড়ে উঠেছে। ১৪ লাইনের প্রতিটি কবিতার প্রতিটি লাইন শুরু হয়েছে একটি নির্দিষ্ট বর্ণকে কেন্দ্র করে। প্রতিটি লাইনের শুরুর শব্দ গঠিত হয়েছে মূলবর্ণকে কেন্দ্র করে।

কিছু কবিতা অক্ষরবৃত্ত ছন্দে লেখা, কিছু কবিতায় কবির নিজস্ব নির্মাণশৈলী বিদ্যমান। প্রতিটি কবিতায় আ কার, ই কার, ঈ কার, ও কার সহ সকল কার বর্জন করা হয়েছে মূলবর্ণকে প্রাধান্য দিয়ে। এজন্য সৃষ্টি হয়েছে- মূলবর্ণ কেন্দ্রিক শব্দসংকট এবং কিছু অপ্রচলিত শব্দের বাধ্যতামূলক ব্যাবহার।

শব্দের আদিতে বসে শব্দ গঠন করতে না পারায়, কিছু কিছু বর্ণ বাদ দিতে হয়েছে। যেমন- ঋ ঙ, ঞ ইত্যাদি। শব্দের আদিতে বসে অর্থপূর্ণ শব্দ গঠনে সক্ষম এরকম ৩৮ টা বর্ণ দিয়ে ৩৮ টা কবিতার সমন্বয়ে রচিত হয়েছে প্রাণের বর্ণমালার লেখার ধারাক্রম। সবগুলো কবিতার জন্মকাল সেপ্টেম্বর- ২০১৫।

কবিতাগুলো শিশুপাঠ্য হিসেবে লেখা হয়নি। সকল বাংলা ভাষাভাষী মানুষকে বর্ণপ্রেমে উজ্জীবিত করতেই এই প্রয়াস। তাছাড়া শব্দপ্রেমী কবির অক্ষরের দায়শোধও আছে কিছুটা। শুধুমাত্র বর্ণের দিকে দৃষ্টি না দিলেও প্রতিটি কবিতা আলাদা আলাদা সময়, ঘটনা, ভাব, বিষয় আর অনুভব ধারণ করেছে, যা পাঠকের মনে কাব্যিক দোলা দিতে সক্ষম বলে কবির আশাবাদ।

আপনার মন্তব্য