বেঁচে থাকার দুঃসহ নির্ভারতা, তৃতীয় পর্ব-১

 প্রকাশিত: ২০১৬-০৩-১৩ ১০:২২:১৮

কাজী মাহবুব হাসান:

[১ম ও ২য় পর্বের পর...]
ভুল বোঝা কিছু শব্দ
 ১
ছোট বড় নানা ধরনের ফোয়ারা আর পার্কের শহর হচ্ছে জেনেভা, যেখানে একসময় ব্যাণ্ডস্ট্যান্ড থেকে সঙ্গীতের সুর ভেসে আসতো। এমনকি শহরের বিশ্ববিদ্যালয়টাও লুকানো অসংখ্য গাছের মধ্যে । ফ্রান্জ কেবলমাত্র তার দুপুরের লেকচার শেষ করেছে, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যখন সে বের হলো, মাঠের সবুজ ঘাসের মধ্যে তখন পানি ছিটিয়ে দিচ্ছে স্বয়ংক্রিয় পানি ছিটানোর যন্ত্রগুলো। তার মেজাজটাও ছিল খুব বেশী মাত্রায় ভালো, সে তার প্রেমিকার সাথে দেখা করতে যাচ্ছে তখন, কয়েকটা রাস্তা পেরিয়ে কাছেই থাকে সে।

সেখানে প্রায়ই সে দেখা করতে যায়, তবে বন্ধু হিসাবে, কখনোই প্রেমিক হিসাবে না। জেনেভার স্টুডিওতে যদি সে তার সাথে শারীরিকভাবে মিলিত হয়, তবে তার জন্য সেটি এক নারীর কাছ থেকে অন্য নারীর কাছে যাওয়া হবে। স্ত্রীর কাছ থেকে প্রেমিকার কাছে, এবং একদিনেই সেখান থেকে আবার ফিরে আসা; আর যেহেতু জেনেভাতে ফরাসী কায়দায় স্বামী স্ত্রী একই বিছানায় ঘুমান, সে কারণে তার জন্য সেটি হবে মাত্র কয়েক ঘণ্টা ব্যবধানে এক নারীর বিছানা থেকে অন্য এক নারীর বিছানায় যাওয়া। এবং সেটা, ফ্রান্জ মনে করে, তার প্রেমিকা এবং স্ত্রী দুজনকেইে এবং পরিশেষে তার নিজেকেও অপমান করা হয়।

এই নারীর জন্য যে ভালোবাসা সে বহন করে -যার প্রেমে সে পড়েছিল বেশ কয়েক মাস আগে - সেটি এত বেশী মূল্যবান তার কাছে যে, সে চেষ্টা করেছিল তার জীবনে এই নারীটির জন্য একটি স্বতন্ত্র জায়গা তৈরি করতে, বিশুদ্ধতার একটি সুরক্ষিত এলাকা। দেশের বাইরের নানা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাঝে মাঝেই তাকে নিমন্ত্রণ করা হতো লেকচার দেবার জন্য, এবং এখন ফ্রান্জ নির্বিচারে সব নিমন্ত্রণই গ্রহণ করে। কিন্তু সেগুলোও যখন যথেষ্ট মনে হয়না তার ভ্রমণপিপাসাকে সন্তুষ্ট করার জন্য, সে তখন নানা সম্মেলন এবং সেমিনার আবিষ্কার করতে শুরু করে স্ত্রীর কাছে তার নতুন অনুপস্থিতিগুলোর ব্যাখ্যা হিসাবে। তার প্রেমিকার যেহেতু সময়সূচী নমনীয়, সে বিদেশে তার এসব লেকচার দেবার সফরে সঙ্গী হতো, সত্যিকারের এবং কাল্পনিক। সুতরাং সেই খুব অল্প সময়ের মধ্যে ফ্রান্জ তার প্রেমিকাকে ইউরোপের অনেক শহর এবং একটি আমেরিকার শহরের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়।

‘আজ থেকে দশ দিন পরে আমার ‍সাথে পালেরমো যেতে তোমার কেমন লাগবে’? ফ্রান্জ জিজ্ঞাসা করে।  

সে উত্তর দেয়, ‘আমার কাছে জেনেভাই ভালো লাগে’। ইজেলের সামনে দাড়িয়ে তার একটি অসমাপ্ত কাজ সে পরীক্ষা করছিল।

‘পালেরমো না দেখে কিভাবে তুমি বাঁচতে পারো’? খানিকটা হালকা ঠাট্টা করার চেষ্টা করে ফ্রান্জ।  

সে বলে, ‘আমি পালেরমো দেখেছি আগে’।  

‘তুমি গিয়েছো সেখানে’, খানিকটা ঈর্ষার স্বরে ফ্রান্জ বলে।  

‘আমার এক বন্ধু একবার সেখান থেকে একটা পোস্টকার্ড পাঠিয়েছিল, টয়লেটের উপর টেপ দিয়ে লাগানো আছে, তুমি খেয়াল করোনি’?

তারপর সে ফ্রান্জকে একটা গল্প শোনায়। অনেকদিন আগে, এই শতাব্দীর প্রথম দিকের কোনো এক সময় একজন কবি ছিলেন। তিনি এত বৃদ্ধ ছিলেন যে, তার শ্রুতিলেখকের সাহায্য নিতে হতো হাটতে বের হলে। ‘গুরু’, তার সহকারী তাকে একদিন প্রশ্ন করে, ‘দেখুন, উপরে আকাশে কি দেখা যাচ্ছে’! এই শহরের উপর দিয়ে উড়ে যাওয়া এটা প্রথম উড়োজাহাজ’! মাটির দিকে থেকে একবারে চোখ না তুলে কবি তার সহকারীকে বলে, ‘আমার মনে তার একটা নিজস্ব ছবি আছে’। বেশ আমারও পালেরমোর এমন নিজস্ব একটি ছবি আছে। সব শহরের মত সেখানে বহু হোটেল আর গাড়ী আছে। আর আমার  স্টুডিওতে সবসময় নতুন আর ভিন্ন ভিন্ন ছবি আছে’।

ফ্রান্জ দুঃখ অনুভব করে। তার প্রেমের জীবনকে বিদেশ ভ্রমণের সাথে জড়িয়ে ফেলতে সে এত বেশী অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে, তার ‘চলো পালেরমো যাই’ কথাটা আসলে সুস্পষ্টভাবে যৌনতার বার্তার বহন করে এবং তার প্রেমিকার, ‘আমি জেনেভাই পছন্দ করি’ বাক্যটির শুধু একটি মাত্র অর্থই হতে পারে: তার প্রেমিকা তাকে আর কামনা করেনা।

কেন সে তার নিজেকে নিয়ে তার প্রেমিকার কাছে এক বেশী অনিশ্চয়তায় ভুগতে পারে? চিন্তার করার মতো কোন কারণ তো তার প্রেমিকা কখনো দেয়নি। সত্যি কথা হলো, তাদের দেখার হবার খুব অল্প সময়ের মধ্যে তার প্রেমিকাই প্রথম উদ্যোগ নিয়েছে তার সাথে যৌন সম্পর্ক গড়ে তুলতে। ফ্রান্জ সুদর্শন, তার জ্ঞানে, পেশাগত অবস্থানে তখন শীর্ষে। তার সহকর্মীরাই  বরং নানা সিম্পোজিয়াম এবং কথোপকথনে তার একরোখা আর দৃঢ়চেতা অবস্থান দেখে  ভয় পেত। তাহলে সে কেন প্রতিদিন চিন্তা করতো, তার প্রেমিকা তাকে ছেড়ে যাচ্ছে?

ফ্রান্জের জন্য একমাত্র যে ব্যাখ্যাটি আমি প্রস্তাব করতে পারি তাহলো, ভালোবাসা ফ্রান্জের জন্য তার বাইরের জীবনের একটি সম্প্রসারণ নয় বরং ঠিক এর বিপরীত। এর মানে তার সঙ্গীর দয়ার প্রতি তার নিজেকে নিবেদন করার একটি আকাঙ্ক্ষা। যে কিনা নিজেকে যুদ্ধবন্দী হিসাবে আত্মসমর্পণ করে তাকে তার সব অস্ত্রও সমর্পণ করতে হয়। এবং আগে থেকেই কোনো আঘাতের বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষা করার সুযোগ বঞ্চিত হবার কারণে, সে চিন্তা না করে থাকতে পারেনা কখন সেই আঘাতটি আসছে। সেকারণে আমি বলতে পারি, ফ্রান্জ এর জন্য ভালোবাসা মানে একটি আঘাত পাবার নিরন্তর প্রত্যাশা ।

যখন ফ্রান্জ তার সেই উৎকণ্ঠা নিয়ে ব্যস্ত, তার প্রেমিকা তার হাত থেকে তুলি নামিয়ে রেখে, পাশের কক্ষে যায়, সে ফিরে আসে মদের একটি বোতল হাতে। কোনো কথা না বলেই সে বোতলটির মুখ খোলে, দুটি গ্লাসে সে মদ ঢালে।

তাৎক্ষনিকভাবে ফ্রান্জ স্বস্তি অনুভব করে এবং কিছুটা হাস্যকরও মনে হয় তার নিজেকে। আমি জেনেভা পছন্দ করি মন্তব্যটির অর্থ তাহলে সে সঙ্গম করতে অস্বীকার করছে না, বরং এর বিপরীত, এর অর্থ সাবিনা ভিনদেশী শহরেই কেবল তাদের সঙ্গম হবে এমন শর্তের সীমাবদ্ধতায় ক্লান্তবোধ করছে।

তার মদের গ্লাস তুলে এক ঢোকে সে গ্লাসটি খালি করে ফেলে। ফ্রান্জও তাই করে। খুব স্বাভাবিকভাবে সে আনন্দিত যে, তার পালেরমো যেতে অস্বীকৃতি জানানো আসলে ভালোবাসারই একটি আহবান, কিন্তু সে কিছুটা বিষণ্ণতাও বোধ করে একই সাথে: তার প্রেমিকাকে দেখে মনে হচ্ছে বিশুদ্ধতার অভয়ারণ্যকে লঙ্ঘন করার জন্য সে বদ্ধপরিকর, যে সীমানা সে তাদের সম্পর্কের অংশ হিসাবে চিহ্নিত করেছিল, তাদের ভালোবাসাকে আটপৌরে অবস্থা থেকে বাঁচাতে আর তার দাম্পত্য গৃহ থেকে চূড়ান্তভাবে বিচ্ছিন্ন রাখতে তার শঙ্কিত প্রচেষ্টাগুলো বুঝতে সে ব্যর্থ হয়েছে।

জেনেভাতে তার চিত্রকর-প্রেমিকার সাথে সঙ্গম না করার নিষেধাজ্ঞা আসলেই অন্য নারীকে বিয়ে করার জন্য তার স্ব-আরোপিত একটি শাস্তি। সে এটিকে এক ধরণের অপরাধ অথবা ত্রুটি হিসাবেই অনুভব করে। এমনকি যদিও তার নিজের দাম্পত্য জীবনের যৌনতা বলে উল্লেখ করার মত কিছু নেই, সে ও তার স্ত্রী এখনও একই বিছানায় ঘুমায়, একে অপরের ভারী নিঃশ্বাসের শব্দে তাদের ঘুমও ভাঙ্গে মধ্য রাতে এবং একে অপরের শরীরের গন্ধও পায়। সত্যিকারভাবে, ফ্রান্জ বরং চায় একা একা ঘুমাতে, কিন্তু বিয়ের বিছানা এখনও বিয়ের বন্ধনের প্রতীক, এবং যেমনটা আমরা জানি, প্রতীক সবসময়ই অলঙ্ঘনীয়।

প্রতিবার যখন সে তার স্ত্রীর পাশে বিছানায় শোয়, সে ভাবে তার প্রেমিকা কল্পনা করছে সেই বিছানায় সে এখন তার স্ত্রীর পাশে শুয়ে আছে, এবং প্রতিবার যখনই সে তার কথা ভাবে, যে লজ্জা অনুভব করে। এ কারণে তার স্ত্রীর সাথে তার ঘুমানোর বিছানাটির সাথে যে বিছানায় সে তার প্রেমিকার সাথে মিলিত হয় তার মধ্যে যতটুকু সম্ভব ততটুকু দূরত্ব সে সৃষ্টি করতে চেয়েছিল।

তার শিল্পী প্রেমিকা নিজের জন্য আরেকবার গ্লাস ভর্তি করে মদে, পান করে এবং তারপর, তখনো নীরব, এবং অদ্ভুত নির্বিকারতার সাথে, যেন পুরোপুরিভাবে সে বিস্মৃত হয়েছে ফ্রান্জের উপস্থিতি, ধীরে ধীরে তার শরীরের উপরাংশের কাপড় খুলতে শুরু করে। সে আচরণ করছে যেন অভিনয়ের কোনো শিক্ষার্থী যার তাৎক্ষনিক সৃজনশীলতার অনুশীলন হিসাবে পুরো ক্লাসকে বিশ্বাস করাতে হবে যে, সে এই ঘরে একা আছে, কেউই তাকে দেখতে পাচ্ছে না।

শুধু স্কার্ট আর ব্রা পরে সে দাড়িয়ে থাকে, হঠাৎ করেই ( যেন তখনই কেবল তার মনে পড়ে সে রুমে একা নেই) ফ্রান্জের দিকে গভীরভাবে সে তার দৃষ্টি নিবন্ধ করে।

সাবিনার এই দৃষ্টি ফ্রান্জকে অপ্রস্তুত করে দেয়, সে ব্যর্থ হয় সেই দৃষ্টির অর্থ অনুধাবন করতে। প্রত্যেক প্রেমিক-প্রেমিকারাই অবচেতনে তাদের প্রেমে কিছু নিজস্ব নিয়মকানুন প্রতিষ্ঠা করে, যা শুরু থেকে কোনো ধরণের বিচ্যুতি সহ্য করেনা। ঠিক এই মূহুর্তে তার প্রতি সাবিনার এই তাকানো তাদের প্রেমের সেই নিয়মবহির্ভূত। তাদের প্রাক-সঙ্গম দৃষ্টি, আচরণ বা ইশারার কোনোটার সাথে তা মেলে না। এটি যেমন না উদ্দীপক তেমনি প্রেমবিলাসীও নয়, শুধুমাত্র যেন প্রশ্নবোধক। সমস্যা হচ্ছে ফ্রান্জের সামান্যতম ধারণা নেই সেই দৃষ্টি আসলে কি জিজ্ঞাসা করছে সেই সম্বন্ধে।

এরপরে স্কার্ট খুলে সে এগিয়ে এসে ফ্রান্জ এর হাত ধরে, দেয়ালের গায়ে হেলান দিয়ে রাখা একটি বড় আয়নার দিকে তাকে ঘুরিয়ে দাড় করায়। তার হাত না ছেড়েই, সেই দীর্ঘ প্রশ্নবোধক দৃষ্টিটি আয়নায় তার নিজের প্রতিবিম্বের দিকে স্থির করে, প্রথমে নিজের উপর সেটি অনুশীলন করে নেয়, এর পর ফ্রান্জের প্রতিবিম্বের উপর।

আয়নার কাছেই পরচুলা রাখার একটি স্ট্যান্ড, যেখানে ঝুলে আছে একটি বোওলার হ্যাট। খানিকটা ঝুঁকে হ্যাটটি হাতে নেয় সাবিনা, তার মাথায় পরে। আয়নায় চিত্র তাৎক্ষনিকভাবে পরিবর্তিত হয়: হঠাৎ করে সেটি তখন একজন রমণী যে তার অন্তর্বাস পরে আছে শুধু, সুন্দর, দূরবর্তী, নির্বিকার এক রমণী যার মাথায় খুবই বেখাপ্পা বোওলার হ্যাট, যে একটি ধূসর রঙা স্যুট আর টাই পরা পুরুষের হাত ধরে দাড়িয়ে আছে।

আবারো তাকে হাসতে হলো উপলব্ধি করে যে আসলেই সে তার প্রেমিকাকে কতটা কম বোঝে। যখন সাবিনা তার সব কাপড় খুলে ফেলেছিল, তেমন বেশী যৌনতা উদ্দীপনা ছিল না সেই আচরণে বরং খানিকটা অন্তরঙ্গ দুজনের মধ্যে ছোট দুষ্টুমি। ফ্রান্জের হাসিতেই বিকিরিত হচ্ছিল সম্মতি আর সমঝোতা।

তার প্রেমিকার একই প্রতিক্রিয়ার জন্য সে অপেক্ষা করেছিল, কিন্তু সাবিনার সেই প্রতিক্রিয়া দেখায়নি। তার হাত না ছেড়েই, যে আয়নার দিকে গভীরভাবে তাকিয়ে থাকে, প্রথমে নিজের দিকে পরে তার দিকে।

কোন কিছুর ঘটার সময়ে এসে তখন অতিক্রান্ত হয়েছে। ফ্রান্জ অনুভব করতে শুরু করে যে এই দুষ্টুমির অদ্ভুত আচরণ (যেটি, কোন মজা হিসাবে, চমৎকার কোনো কিছু মনে করতেই সে সুখী) অনেকক্ষণ ধরেই চলছে। সুতরাং বোওলার টুপির প্রান্তটি সে তার দুই আঙ্গুল দিয়ে ধরে সাবিনার মাথা থেকে তুলে ধরে এবং হাসে, এরপর হ্যাটটিকে সে রেখে দেয়া তার পুরনো জায়গা পরচুলা রাখার স্ট্যান্ডে। যেন ভার্জিন মেরীর ছবির উপর কোনো দুষ্টু শিশুর আঁকা গোঁফ সে মুছে দিচ্ছে।

বেশ কয়েক সেকেন্ড সাবিনা স্থির হয়ে দাড়িয়ে থাকে, আয়নায় তার দিকে তাকিয়ে। এরপর ফ্রান্জ তাকে চুম্বন করে, আবারো তাকে জিজ্ঞাসা করে দশ দিনের জন্য তার সাথে পালেরমো যেতে। কোন প্রশ্ন ছাড়াই এবার সাবিনা হ্যাঁ বলে এবং সে প্রস্থান করে।

আবারো তার মেজাজ ভালো হয়ে যায়। জেনেভা, বিরক্তি আর বিষণ্ণতার শহর হিসাবে সারা জীবন ধরে যে শহরকে সে অভিশাপ দিয়েছে, তাকে এখন মনে হচ্ছে সুন্দর, যেখানে অসংখ্য অজানা অভিযানের সম্ভাবনা আছে। বাইরের রাস্তায় এসে দাড়িয়ে উপরে চওড়া স্টুডিওর জানালার দিকে তাকায় সে। তখন বসন্তের শেষ ভাগ, বেশ উষ্ণতা, দাগ কাটা ক্যানোপী দিয়ে সব জানালা ছায়ায় ঢাকা। ফ্রান্জ হেটে পার্কে প্রবেশ করে। এর শেষ প্রান্তে অর্থোডক্স চার্চের সোনালী কুপোলা উঁচু হয়ে আছে যেন দুটো কামানের গোলা, কোনো আসন্ন পতনের থেকে তাদের শূন্যে ভাসিয়ে রেখেছে কোনো অদৃশ্য শক্তি। সবকিছুই সুন্দর। এরপর সে লেকের পাড়ে যায়, যেখান থেকে জনপরিবহনের ছোট ফেরী নেয় লেকের উত্তর প্রান্তে যাবার জন্য, যেখানে সে থাকে।
[চলবে...]

আপনার মন্তব্য